আপনি ঈশ্বর থেকে পশ্চাদপসরণ করেন না। একদিন আপনাকে তাঁর মুখোমুখি হতে হবে। অনেক দেরী হওয়ার আগেই ঘুরে দাঁড়ান এবং যীশু খ্রীষ্টকে অনুসন্ধান করুন। তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করুন, আপনার সকল পাপ-পঙ্কিলতা ক্ষমা করা হবে এবং ঈশ্বরের শান্তি পাবেন।

বিস্ময়কর কৃপা

ঈশ্বর মুক্তির উপায়কে অতি সহজ করেছেন যাতে প্রত্যেকেই তা অর্জন করেত পারে। আপনি যদি যীশুকে বিশ্বাস করতে মনস্থ করেন, তবে ঈশ্বর আপনার পিতা হবেন আর আপনি তাঁর প্রিয় সন্তান হবেন এবং তাঁর স্বর্গীয় ও চিরস্থায়ী রাজ্যের অংশ হবেন। যীশুর আত্মত্যাগ ছিল ঈশ্বরের নিকট আমাদেরকে ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায়, কারণ আমাদের পাপ আমাদেরকে তাঁর থেকে পৃথক করেছে।  কিন্তু যীশু আমাদের পরিত্রান দিতে আমাদের পাপ নিতে ই্চ্ছুক ছিলেন এবং সেজন্য তিনি ক্রুশের উপরেই মারা গেছেন।  যারা তাঁর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে তারা প্রত্যেকেই ন্যায়সঙ্গত, সংরক্ষিত ও সত্য খ্রিষ্টান হয়।  ঈশ্বর তখন যীশুর মাধ্যমে আপনাকে দেখেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে আপনি পাপ ও অপরাধ মুক্ত হয়ে যান। ইহা ঈশ্বরের পক্ষ থেকে আমাদের প্রত্যেকের জন্য একটি বিনামূল্যের উপহার; একজন দোষীকে সততা প্রতিপাদন করতে একজন নির্দোষকে উৎসর্গ করা হয়েছিল।

“কিন্তু কিছু লোক তাঁকে গ্রহণ করল এবং তাঁকে বিশ্বাস করল৷ যাঁরা বিশ্বাস করল তাদের সকলকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হবার অধিকার দান করলেন৷” (যোহন ১: ১২)

সতর্কতা

ঈশ্বর থেকে দূরে সরে যাওয়ার পরিণতি সম্পর্কে প্রতিটি ব্যক্তির জানার অধিকার আছে।  এটা জানতে হবে যে ঈশ্বর হলেন ঐসব লোকের জন্য একজন প্রিয় পিতা যারা যীশুকে রক্ষাকর্তা হিসেবে গ্রহণ করে, অবশ্য এটাও জানতে হবে যে তাঁর থেকে যে মুখ ফিরিয়ে নেয় বিচারক হিসেবে তাঁর সাথেই একদিন সাক্ষাত হবে।  সেই মুহূর্তে দিত্বীয় কোনও সুযোগও থাকবে না এবং কোনও সম্ভাবনাও থাকবে না অনুশোচনা করার। বাইবেলের গসপেল বা ধর্মীয়বাণীগুলি মৃত্যুর পর দুটি বিকল্প পরিনতির কথা বলেছে; ঈশ্বরের রাজ্য অথবা হতাশা ও দুর্দশার স্থান।

যীশু বললেন; “যাঁরা কেবল তোমাদের দৈহিকভাবে হত্যা করতে পারে তাদের ভয় করো না, কারণ তারা তোমাদের আত্মাকে ধ্বংস করতে পারে না৷ কিন্তু যিনি দেহ ও আত্মা উভয়ই নরকে ধ্বংস করতে পারেন বরং তাঁকেই ভয় কর৷” (মথি ১০: ২৮)

এই ধরাধামে আপনি যতটা সময় ব্যয় করেছেন তা অনন্তকালের তুলনায় চোখের এক পলকও নয়, তবুও এই জীবনে আপনি বিশ্বাস করার জন্য যা বেছে নিয়েছেন তা স্থির করে আপনার চিরন্তন ভাগ্য। ইহাই আপনার পছন্দ যা নির্ধারণ করে কোথায় আপনি অনন্তকাল ব্যয় করবেন।  এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যা আপনাকেই করতে হবে, তাই দয়াকরে বিষয়টি যত্নসহকারে বিবেচনা করুন।

যীশু বললেন; “কেউ যদি সমস্ত জগত্ লাভ করে তার প্রাণ হারায় তবে তার কি লাভ?” (মথি ১৬:২৬)

ঠিক যেমন আপনি

একজন খ্রীষ্টান হওয়ার জন্য কী দরকার? একজন খ্রীষ্টান হওয়া মানে আপনি কী করবেন বা কী অর্জন করবেন তা নয়, বরং বিষয়টি হল ঈশ্বর আপনার জন্য কী করছেন এবং কী অর্জন করেছেন।  বিষয়টি এমনও নয় যে আপনি কতটা ভাল ছিলেন বা কতটা খারাপ ছিলেন, অতীত জীবনে আপনি কী করেছেন বা আপনার অভ্যন্তরে কতটা ভাল অনুভব করছেন। আপনি যেরকম ঠিক সেরকম ভাবেই আপনার যীশুর নিকট আসা উচিত। ইহা একটি সাধারণ পছন্দ এবং পছন্দ যাই হোক না কেন লেগে থাকাটায় মূল বিষয়।

“আর য়ে কেউ প্রভুর নামে ডাকবে, সে উদ্ধার পাবে।” (শিষ্যচরিত (এ্যক্টস) ২:২১)

যীশু বললেন;“তোমরা যাঁরা শ্রান্ত-ক্লান্ত ও ভারাক্রান্ত মানুষ, তারা আমার কাছে এস, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব৷” (মথি ১১:২৮)

এবং;“যা হারিয়ে গিয়েছিল তা খুঁজে বের করতে ও উদ্ধার করতেই মানবপুত্র এ জগতে এসেছেন৷” (লুক ১৯:১০)

পছন্দ করুন

তবে প্রত্যেককে অবশ্যই পছন্দ করতে হবে।

যীশু বললেন; “য়ে আমার পক্ষ নয়, সে আমার বিপক্ষে৷” (মথি ১২:৩০)

কেউ বৃদ্ধ বয়সে দেরিতে বরং খ্রীষ্টান হওয়ার ইচ্ছা পোষন করতে পারে।  এটা সম্ভব।  আপনি যতদিন বেঁচে থাকবেন যীশুর নিকট ফিরে আসতে খুব বেশি দেরি করা যাবে না। যাহোক, আপনি কিন্তু কখনই জানেন না যে আপনি কতদিন হায়াত পাবেন, কখন মারা যাবেন, অথবা আপনি আপনার নিজের মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকবেন কিনা। আর যখন আপনি মারা যাবেন, তখন দরজাটি চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে এবং সেই অবস্থায় দ্বিতীয় কোনও সুযোগ থাকবে না।  তাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে।

আপনার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি দেরি না করার জন্য দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করা উচিত যা আপনাকেই বিবেচনা করতে হবে।

“আজ, তোমরা যদি ঈশ্বরের রব শোন, অতীত দিনের মতো হৃদয় কঠিন করো না।” ( হিব্রুদের কাছে পত্র ৩:৭-৮ )

সুরক্ষা জাল

যীশুর দিকে ফিরে যাওয়া ঠিক ঐ ব্যক্তির মতো যে মাটি থেকে অনেক উপরে একটি লাইনে হাটছে ( উদাহরণ স্বরুপঃ সার্কাসে একজন টাইট্রোপ ওয়াকার), এবং তারপর নিম্নপ্রান্তে একটি সুরক্ষা জাল ব্যবহার করা হল।  জাল ব্যতীত একটি পতন একটি দুর্ঘটনা হবে। নীচের সুরক্ষা জাল দ্বারা ব্যক্তিটি পিছলানো এবং পতনের ক্ষেত্রে আঘাত পাবে না বরং জাল দ্বারা সে রক্ষা পাবে। এবং এটি উপরে উঠে আবার শুরু করার একটি বিষয় মাত্র।

যীশু হলেন সেই সুরক্ষা জাল এবং কোনও কিছু কখনই সেই জালের শক্তিমত্তা ভাঙতে পারবে না।

“তাই যাঁরা খ্রীষ্ট যীশুতে আছে তারা বিচারে দোষী সাব্যস্ত হবে না৷” (রোমীয় ৮:১)

তবে জাল ছাড়া, যীশু ছাড়া; প্রতিটি পাপ এবং ভুল যা একজন মানুষ করে, তা বিচার দিবসের জন্য হিসাব করা হবে; সেদিন ঈশ্বর সমগ্র মানব জাতির বিচার করবেন। পবিত্র বাইবেল অনুসারে পরিনতি হবে ঈশ্বরের ভালবাসা ও তাঁর রাজ্য থেকে চিরন্তন বিচ্ছেদ। যীশু ঘোষণা করেছেন;

“আমি তোমাদের বলছি, লোকে যত বেহিসেবী কথা বলে, বিচারের দিনে তার প্রতিটি কথার হিসাব তাদের দিতে হবে৷” ( মথি ১২:৩৬ )

“ঈশ্বরের সামনে কোন সৃষ্ট বস্তুই তাঁর অগোচরে থাকতে পারে না, তিনি সব কিছু পরিষ্কারভাবে দেখতে পান৷ তাঁর সাক্ষাতে সমস্ত কিছুই খোলা ও প্রকাশিত রয়েছে, আর তাঁরই কাছে একদিন সব কাজকর্মের হিসেব দিতে হবে৷” (হিব্রুদের কাছে পত্র ৪:১৩)

“য়ে কেউ পুত্রের ওপর বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবনের অধিকারী হয়; কিন্তু য়ে পুত্রকে অমান্য করে সে সেই জীবন কখনও লাভ করে না, বরং তার ওপরে ঈশ্বরের ক্রোধ থাকে৷” (যোহন ৩:৩৬)

খ্রীষ্টান হন

খ্রীষ্টান হওয়ার জন্য ইহা এমন একটি পছন্দ যা আপনি প্রার্থনার মাধ্যমে প্রকাশ করতে পারেন।প্রার্থনা হল সহজ-সরল ভাবে ঈশ্বরের সাথে কথোপকথন। তিনি আপনাকে চিনেন। আমরা আপনাকে নীচের প্রার্থনা করার জন্য সুপারিশ করছিঃ

“প্রিয় যীশু ! আমি আমার জীবনে যেসব ভুল কাজ করেছি সেজন্য আমি দুঃখিত। আমি আপনার ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমাকে পাপ মুক্ত করতে আপনার ক্রুশে মৃত্যু বরণ করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। অনুগ্রহপূর্বক আমার জীবনে আগমন করুন এবং আপনার পবিত্র আত্মায় আমাকে পরিপূর্ণ করুন আর অনন্তকাল আমার সাথে থাকুন। ধন্যবাদ আপনাকে যীশু, আমীন। ”

এই প্রার্থনা কি আপনার মনের অভিপ্রায়? যদি তাই হয়, তবে আমরা আপনাকে এই প্রার্থনা করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি এবং যীশুর প্রতিশুতি অনুযায়ী তিনি আপনার জীবনে আসবেন।

একজন খ্রীষ্টান হওয়া

যীশুকে ত্রাণকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করা একজন ব্যক্তিকে একশত ভাগ (১০০%) সত্যতা যাচায় করা। আপনার কাছে ঈশ্বরের প্রয়োজনীয়তা হল, তিনি যীশুর আত্মত্যাগের মাধ্যমে আপনার নিকট একটি নিখরচায় উপহার হিসেবে দিয়েছেন।

তবে এটাও ঈশ্বরের ইচ্ছা যে যিনি খ্রীষ্টান হয়েছেন তিনি তার উন্নতি এবং অগ্রগতি করবেন; ভুল থেকে দূরে রেখে অনেকটা যীশুর মত করে দিবেন। সততা এবং নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে নয়, করণ আপনি নিজ থেকে  তা অর্জন করতে পারবেন না এবং একজন খ্রীষ্টান হিসেবে ইতিমধ্যে আপনাকে ইহা একটি বিনামূল্যের উপহার হিসেবে দেয়া হয়েছে। তবে যাইহোক আপনি ঈশ্বর এবং যীশুর কৃপায় নিরাপদ যে আপনাকে রক্ষা করেছে যখন আপনি এটার প্রত্যাশী ছিলেন না।

একজন খ্রীষ্টান হিসেবে উন্নতি করতে দুটি অগ্রবর্তী ধাপ এবং একটি পশ্চাৎবর্তী ধাপ এবং মাঝেমধ্যে দুটি পশ্চাৎবর্তী ধাপ এবং একটি অগ্রবর্তী ধাপের মত অনুভব করতে পারেন।  গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সবসময় যীশুর কাছাকাছি থাকুন এবং কখনও তাঁর কাছে কোনও কিছু গোপন করার চেষ্টা করবেন না।  যদি আপনি এমন কিছু করেন যা আপনার জানামতে ভুল, তবে তা স্বীকার করুন এবং তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। যীশু আপনার নিরাপত্তার জাল হবেন।  এবং তাঁকে আপনার আজীবন প্রয়োজন হবে।

“আমরা যদি নিজেদের পাপ স্বীকার করি, বিশ্বস্ত ও ধার্মিক ঈশ্বর আমাদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করবেন ও সকল অধার্মিকতা থেকে আমাদের শুদ্ধ করবেন৷” (যোহনের ১ম পত্র ১:৯)

আমরা দৃঢ়ভাবে সুপারিশ করি যে আপনিও আপনার নিজ এলাকায় একজন ভাল খ্রীষ্টীয় ধর্মসভা/ গির্জার অংশ হন; অন্যান্য খ্রীষ্টানদের সাথে অংশীদারিত্ব পান, ঈশ্বরের বাণী প্রচার করুন, যোগাযোগ করুন ইত্যাদি।

আপনি যদি কখনই বাপ্তিস্ম না হয়ে থাকেন তবে আমরা জোরালো ভাবে সুপারিশ করছি যে আপনি খ্রীষ্টান যাজক বা খ্রীষ্টিয় মন্ডলীর সাথে যোগাযোগ করুন এবং প্রভূ যীশুর নামে বাপ্তিস্ম হোন।

যেমন বাইবেল বলে: “আপনারা মন-ফিরান, আর প্রত্যেকে পাপের ক্ষমার জন্য যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তাইজ হোন, তাহলে আপনারা দানরূপে এই পবিত্র আত্মা পাবেন” (শিষ্যচরিত ২:৩৮)

খ্রীষ্টধর্ম ও অন্যান্য ধর্মসমূহ

খ্রীষ্টধর্ম ও অন্যান্য ধর্মের মাঝে একটি প্রধান পার্থক্য হলঃ

অধিকাংশ ধর্মই হল ব্যক্তিগত ত্যাগের মাধ্যমে ঐশ্বরিক লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টা করা এমন ব্যক্তিদের সম্পর্কে।

খ্রীষ্টধর্ম হল বিপরীত বিষয়ে, ঈশ্বর সম্পর্কে যিনি বিশ্বকে ভালবাসেন এবং সমগ্র মানবজাতির পরিত্রাণ পেতে আপন পুত্রের মাধ্যমে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন।

একমাত্র পথঃ

বাইবেল অনুসারে যীশু হলেন ঈশ্বরের নিকট পৌছার একমাত্র পথ। অন্য কোনও পথ নেই। আপনি একটি সম্ভ্রান্ত জীবনযাপন করতে পারেন, এবং অনেক ভাল কাজও করতে পারেন, কিন্তু এসব আপনাকে ঈশ্বরের নিকটবর্তী নিয়ে যাবে না। আপনি তখনও আপনার মন ও প্রাণে পাপ করবেন যদিও আপনি একজন ভাল এবং দয়ালু মানুষ হয়ে থাকেন। আপনি নিজকে সততা যাচাই করতে পারবেন না অথবা আপনি যীশুকে বাদ দিয়ে নিজের পক্ষ থেকে ঈশ্বরের সাথে সত্যিকারের সম্পর্কে আসতে পারবেন না। আপনাকে স্বীকার করতে হবে যে আপনি একজন পাপী এবং যীশুর আত্মত্যাগ আপনার প্রয়োজন।

যীশু বললেনঃ “আমিই পথ, আমিই সত্য ও জীবন৷ পিতার কাছে যাবার আমিই একমাত্র পথ৷” (যোহন ১৪:৬)

“যীশুই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি মানুষকে উদ্ধার করতে পারেন৷ জগতে তাঁর নামই একমাত্র শক্তি যা মানুষকে উদ্ধার করতে পারে৷”
(এ্যক্টস/ শিষ্যচরিত ৪:১২)

“সকলেই পাপ করেছে এবং ঈশ্বরের মহিমা থেকে বঞ্চিত হয়েছে৷ কিন্তু তারা ঈশ্বরের অনুগ্রহে বিনামূল্যে যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে পাপ থেকে মুক্তিলাভ করে ঈশ্বরের কাছে ধার্মিক প্রতিপন্ন হয়েছে৷” (রোমীয় ৩: ২৩-২৪)

পুনরুত্থানের সাক্ষী

মানুষের পাপের জন্য ঈশ্বরের নিকটে একমাত্র যে আত্মাহুতি গ্রহণযোগ্য হয়েছে তা হল যীশুর আত্মাহুতি। এবং মৃত্যুর তৃতীয় দিনে যীশুকে পুনরুত্থিত করে তিনি এই আত্মাহুতির গ্রহণযোগ্যতার ঘোষণা দিয়েছেন।

প্রেরিত পল যীশুর শিষ্যরা ছাড়াও ৫০০ (পাঁচশত) টিরও বেশি সাক্ষীর কথা উল্লেখ করেছেন যারা যীশুর সাথে সাক্ষাত করেছেন তাঁর পুনরুত্থানের পর, এবং তাদের অধিকাংশই পরবর্তীতে ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বেঁচে ছিলেন। (১ম করিন্থীয় ১৫:৬)। আরও অনেক মানুষ তাঁর মৃত্যুর সাক্ষী হয়েছিল রোমীয়রা সহ যারা তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করেছিল।

পুনরুত্থানের পর যীশু তাঁর শীষ্যদের বলেছিলেনঃ

“আমি যখন তোমাদের সঙ্গে ছিলাম, তখনই তোমাদের এসব কথা বলেছিলাম, আমার সম্বন্ধে মোশির বিধি-ব্যবস্থায়, ভাববাদীদের পুস্তকে ও গীতসংহিতায় যা কিছু লেখা হয়েছে তা পূর্ণ হতেই হবে৷ এরপর তিনি তাঁদের বুদ্ধি খুলে দিলেন, য়েন তাঁরা শাস্ত্রের কথা বুঝতে পারেন৷ যীশু তাঁদের বললেন, একথা লেখা আছে খ্রীষ্টকে অবশ্যই কষ্ট ভোগ করতে হবে, আর তিনি মৃত্যুর তিন দিনের দিন মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন৷ এবং পাপের জন্য অনুশোচনা ও পাপের ক্ষমার কথা অবশ্যই সমস্ত জাতির কাছে ঘোষণা করা হবে,…আর তোমরাই এসবের সাক্ষী।” (লুক ২৪:৪৪-৪৮)

যীশু সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী

যীশু নিজেই তাঁর মৃত্যু ও পুনরুত্থানের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তাঁর মৃত্যুর কয়েক বছর আগে। বহু শতাব্দি পূর্বে ঈশ্বরের দূতগণ তাঁর জীবন, মৃত্যু ও পুনরুত্থানের ব্যপারে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।  বাইবেলের আদি পুস্তকে (ওল্ড টেস্টামেন্ট) ত্রাণকর্তার ব্যপারে সর্বমোট ৪৮ টি ভবিষ্যদ্বাণী আছে যেখানে ঈশ্বর তাঁকে বিশ্বে প্রেরণের প্রতিজ্ঞা করেছেন।

এর একটি উদাহরণ আছে নবী ইসাইয়া থেকে যিনি যীশু খ্রীষ্টের মানুষ হিসেবে জন্মের পূর্বে প্রায় ৭০০ (সাতশত) বছর বেঁচে ছিলেন (নিম্নলিখিত বাণীটি মূল বাণীর সংক্ষিপ্ত নির্যাস মাত্র):

“কিন্তু সে আমাদের অসুখগুলোকে বয়ে বেড়িয়েছিল। সে আমাদের যন্ত্রণা ভোগ করেছিল। এবং তার কোন কৃতকর্মের জন্য ঈশ্বর তাকে শাস্তি দিচ্ছেন বলে আমরা মনে করেছিলাম। কিন্তু আমাদের পাপের জন্য সে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছিল। আমাদের কাঙ্খিত শাস্তি সে পেয়েছিল। তার আঘাতের জন্য আমাদের আঘাত সেরে উঠেছিল। আমরা সবাই হারিয়ে যাওয়া মেষের মত ঘুরে বেড়িয়েছিলাম। আমরা সবাই আমাদের নিজেদের পথে গিয়েছিলাম যখন প্রভু আমাদের সব শাস্তি তাকে দিয়ে ভোগ করাচ্ছিলেন।” (ইসাইয়া ৫৩:৪-৬)

উচ্চতর বিস্তর ভবিষ্যদ্বাণী

যীশুর অনেক শত বছর পূর্বে মোশির (মুসা আঃ) শরিয়তে, নবীগণের এবং গীতসংহিতায় অনেক ভবিষ্যদ্বাণী রচিত হয়েছে, সেগুলোও অত্যন্ত বিস্তর। কিছু উদাহরণ দেয়া হলঃ

একজন বন্ধু (জুডাস) দ্বারা তাঁকে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে এবং কিছু অর্থের জন্য তাঁকে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে; ৩০টি রূপোর মুদ্রা (সামসঙ্গীত ৪১:১০ এবং জাখারিয়া ১১:১২), তাঁর মৃত্যুর পর কি জন্যে এই অর্থ ব্যয় করা হবে; ..“ইহা মন্দিরের অর্থভান্ডারে ছুঁড়ে ফেল..” (কুলাল, মন্দিরের মাঠ) (জাকারিয়া ১১:১৩), তাঁর হাত ও পাকে ছিদ্র করা হবে (ক্রুশবিদ্ধকরণের জন্য) (সামসঙ্গীত ২২:১৭), তাঁর পা গুলো ভাঙ্গা উচিৎ হবে না (সামসঙ্গীত ৩৪: ২১) ক্রুশবিদ্ধকরণের শেষ পর্যায়ে আরও অন্যান্য নির্দিষ্ট উদাহরণ সহ কোনটি মানসম্মত পদ্ধতি ছিল তাঁর শরীরের পাশে বর্শা দিয়ে বিদ্ধ করার পরিবর্তে (জাখারিয়া ১২:১০)।  এ সমস্ত ঘটনা বহু শতাব্দি পূর্বেই ভবিষ্যদ্বাণী এবং লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল (প্রমাণঃ মথি ২৪:১৫, ২৬:৪৭-৪৮ এবং ২৭:৫-৭, লুক ২৩:৩৩, যোহন ১৯:৩৩-৩৪)। তাঁর ক্রুশবিদ্ধ ও মৃত্যু সম্পর্কিত অধিকাংশ ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণ হয়েছিল রোমীয়দের দ্বারা যারা এই পুরানো ভবিষ্যদ্বাণী সম্পর্কে কিছুই জানত না।

সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণী পরিপূর্ণতার মধ্য দিয়ে ঈশ্বর নিশ্চিত করেছিলেন যে যীশু খ্রীষ্টই হলেন ত্রাণকর্তা যা তিনি পূর্বের দিনগুলিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এবং সমগ্র মানবজাতির জন্য তাঁর কাছে ফিরে আসার পথ।

“তাই এসকল ঘটার আগেই আমি এসব তোমাদের এখন বললাম, যাতে ঘটলে পর তোমরা বিশ্বাস কর৷” (যোহন ১৪:২৯)